Follow Now in Google News Follow!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সোনার তরী কবিতা ও তার মূলভাব

Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
সোনার তরী, কবিতা ও তার মূলভাব

কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করে যে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন প্রতিভাটি আপনার বেশি মনে লেগেছে। তবে আমি চোখ বন্ধ করে বলব সেটি আধ্যাত্মিকতা। কারণ কবিগুরুর আধ্যাত্মিকতার ক্ষমতায় ভারতবাসীদের এনে দিয়েছিল প্রথম নোবেল পুরস্কার। সোনা তরী কবিতাটিও ঠিক তেমনি আধ্যাত্মিক চিন্তা-চেতনায় লিখিত কবিতা।

সোনার তরী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা খরপরশা।

কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।
একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা


প্রভাতবেলা--
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে--

দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে

আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।
যত চাও তত লও তরণী-'পরে।
আর আছে?-- আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে--

এখন আমারে লহ করুণা করে।
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই-- ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি--
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।

ফাল্গুন  ১২৯৮ বাংলা  শিলাইদহ।  বোট 

আরো পড়ুন- “আমরা সবাই পাপী; আপন পাপের বাটখারা দিয়ে; অন্যের পাপ মাপি”

মূলভাব

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সোনার তরী কাব্যগ্রন্থটি রচনা করার সময় ঘুরে বেড়িয়েছেন পূর্ব বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে।

ফলে গ্রামাঞ্চলের নর-নারীর সুখ - দুঃখ, আশা - নিরাশা ও মান - অভিমানের সাথে তার নিবিড় পরিচয় মেলে এবং মনে প্রাণে তা অনুভব করবার সুযোগ পায়। কবিতাটির অন্তরালে কবি মানুষের সারাজীবন একটি চিত্র তৈরি করেছেন।

নদীর স্রোত যেমন প্রবাহমান ঘড়িরর কাটাও তেমন বেগবান।  কোনোটাকেই আটকে রাখা সম্ভব নয়। মানুষের জীবনও সেই নদীর স্রোত এবং ঘড়ীর কাটার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলে। তাকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। মানুষ তার সারাটাজীবন পরিশ্রম করে কাটিয়ে দেয়। অথচ যখন তার সবকিছু হয়ে যায় তখন দেখে যে তার চলে যাবার সময় ঘনিয়ে এসেছে।

সারাজীবনের যত সঞ্চয়, যা নিয়ে এতদিন ভুলে ছিল তার সবটুকুই সোনার তরী নামক নৌকায় তুলে দিয়ে যখন বলল যে তাকেও করুণা করে সেই নৌকায় তুলে নিতে। সোনার ধানরুপে জীবনের সমস্ত কর্মকে তুলে নিলেও অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি মানুষকে তুলে নিলেন না।

পরিশেষে বলা যায়, মানুষ চায় তার কর্ম, ধ্যান-ধারণার ফল, জ্ঞান-বিজ্ঞানের উপকার যেমন জগৎ ভোগ করছে সেই সঙ্গে যেন তার ব্যাক্তি জীবনকেও মানুষ স্মরণ করে। কিন্তু এই জগৎ সেই ব্যাক্তিকে চায় না, শুধু চায় তার কর্মকেই।

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.